শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী মধুটিলা ইকোপার্কের প্রধান ফটকের সামনে ৩টি দোকান ভেঙে দোকানে থাকা আম, তেতুল, চালতা ও বড়ইয়ের প্রায় অর্ধলাখ টাকার আচার খেয়ে সাবাড় করেছে ২০ থেকে ২৫টি বন্যহাতির একটি পাল। একইসময় মধুটিলা ইকোপার্কেও তান্ডব চালায় হাতির পালটি। ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। বন বিভাগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ফসলের মৌসুমে প্রতিবছরই ৪০ থেকে ৪৫টি বন্যহাতির পাল খাবারের সন্ধানে উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও, নয়াবিল ও রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের লোকালয়ে তান্ডব চালায়। এসময় হাতির পালটি খেতের কাচা ও পাকা ধান খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। এসময় বসত-বাড়িতেও তান্ডব চালায় তাঁরা। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মধুটিলা ইকোপার্কের সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন জিয়াউল ইসলাম নামে এক কৃষকের জমিতে আমন ধান খাওয়ার জন্য পাহাড় থেকে ২০ থেকে ২৫ টি বন্যহাতির একটি পাল লোকালয়ে নেমে আসে। পরে রাত ৮টার দিকে ধান খেতের কাছেই আচারের গন্ধে মধুটিলা ইকোপার্কের প্রধান ফটকের সামনে থাকা হামিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর ও হাম্বিলি নামের তিন ব্যবসায়ীর দোকানে চলে আসে হাতির পালটি। এসময় দোকান তিনটি ভেঙে হামিদুলের দোকানে থাকা আম,তেতুল,চালতা ও বড়ইয়ের প্রায় অর্ধলাখ টাকার আচার খেয়ে সাবার করে হাতির পালটি। পরে মধুটিলা ইকোপার্কের মহুয়া রেস্ট হাউজে গিয়েও তান্ডব চালায় হাতির দলটি। 


এসময় রেস্ট হাউজের পানির পাইপ, ফুলের বাগান, বিশ্রামের জন্য নির্মাণ করা ছাতা, ডাস্টবিনসহ প্রায় একলাখ টাকার ক্ষতি করে হাতির পালটি। পরে বন বিভাগ, এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম ও এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে হইহুল্লোর ও ডাক চিৎকারে এক ঘন্টার প্রচেষ্টায় হাতির পালটিকে পাহাড়ে ফেরত পাঠানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম বলেন, শীত পড়ে গেছে। তাই পর্যটক ও বাড়বে। দুই দিন আগেই এক লাখ টাকার আচার কিনা আনছি। কিন্তু হাতি তো সব শেষ কইরা দিলো। এখন সরকারিভাবে আমাদের সহযোগীতা না করলে পরিবার নিয়া বিপদে পইরা যামু। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কোন ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জার রফিকুল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, হাতির তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ পাবেন।  বৃহস্পতিবার রাতে মধুটিলা ইকোপার্কের মহুয়া রেস্ট হাউজের আশপাশে হাতির পালটি প্রায় লাখ টাকার ক্ষতি করেছে। পরে এক ঘন্টার চেষ্টায় হাতির পালটিকে পাহাড়ে পাঠানো হয়। বর্তমানে হাতির দলটি পার্শ্ববর্তী রাংটিয়ায় অবস্থান করছে।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024