মাইশা বিন মেরী

সুশীল  সমাজ  গঠনের  প্রয়াসে অনেক  আইন, ন্যায় নীতি  প্রণয়ন করা হয়। আইন  শৃঙ্খলা বাহিনী  গঠন  করা  হয়।জেল জরিমানা ও করা হয়। তবুও  থেমে  নেই  অপরাধ  প্রবণতা। সমাজে এমন  কিছু  মানুষ  থাকে  যারা আইন, অনুশাসন , ন্যায় নীতির  বিরুদ্ধে  কাজ করে। তারা  যেমন  নিজের  ভালো  বুঝে  না  তেমনি  অন্যের ভালো ও বুঝে না। আমরা সকলেই  ধূমপানের ক্ষতিকর  দিক সম্পর্কে  জানি, তবুও  কিছু  শিক্ষিত, অশিক্ষিত,  তরুণ, বয়স্ক, বৃদ্ধ  ধূমপানে নেই  বিরত। একজন  সক্রিয়  ধূমপায়ীর ধূমপানের সময়  ধোঁয়ার যে অংশ  চারপাশের পরিবেশে ছড়িয়ে  পড়ে  এবং  অনৈচ্ছিকভাবে  মানুষের  দেহে  নিঃশ্বাসের মাধ্যমে  প্রবেশ করে  তাকে  নিস্ক্রিয়  ধূমপান  বলে।  এই নিস্ক্রিয়  ধূমপানের ফলে  কেউ  ধূমপান  না করেও  ক্ষতিগ্রস্ত  হতে পারে।  নিস্ক্রিয়  ধূমপানের শিকার  আমরা  প্রতিদিন হই। বিশেষকরে পাবলিক প্লেস যেমন  শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,  সরকারি  অফিস, আধা সরকারি  অফিস, বাস  স্টেশন, রেল স্টেশন, রেস্টুরেন্ট, শিশুপার্ক  বা মেলা আর পাবলিক  পরিবহন  তো আছেই। এগুলো  জায়গায় সরাসরি  ধূমপানের ফলে  অধূমপায়ীরাও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে।  তরুণ  সমাজের  অনেকেই হতাশা  বা বিলাসিতার  কারণে  ধূমপানে আসক্ত  হচ্ছে।  ধূমপান  কখনো  হতাশা  দূর  করতে  পারে না। একটা  ক্ষতিকর বিষয়  কখনো  আরেক টা  ক্ষতি  থেকে।  উদ্ধার  করতে  পারে  না।  আর আধুনিকতার  নামে  যা আমাদের  তিলে তিলে  ধ্বংস   মৃত্যুর দিকে  ধাবিত  করে  সে আধুনিকতাকে পরিহার  করাই  উত্তম।    ধূমপানের কারণে  নারী, পুরুষ, শিশু  এমনকি  মায়ের  পেটের  শিশুও ক্ষতিগ্রস্ত  হচ্ছে। এছাড়াও  দীর্ঘমেয়াদী ধূমপানের ফলে স্ট্রোক, ক্রনিক এবস্ট্রাকটিভ  পালমোনারি ডিজিজ  ক্যান্সারসহ আরো অনেক  মারাত্মক মরণব্যাধির ঝুঁকি  বহুগুণে বাড়ায়।  বিশ্ব  স্বাস্থ্য  সংস্থার হিসাব মতে  প্রতি বছর  সারা  বিশ্বে প্রায়  ৬০ লাখ  লোক  তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবে মারা যায়। যার  প্রায়  ৬ লাখ  পরোক্ষ  ধূমপানের শিকার। বিংশ  শতাব্দীতে  তামাক প্রায়  ১০ কোটি  ব্যক্তির মৃত্যু  ঘটিয়েছে।  এছাড়াও মাকিন যুক্তরাষ্ট্রের  সেন্টার ফর ডিজিজ  কন্ট্রোল  এন্ড  প্রিভেনশন (CDC)    সেন্টার  ধূমপানকে অকাল মৃত্যুর প্রধান কারণ  হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অ্যান্টি  টোব্যাকো অ্যালায়েন্স তথ্যমতে বিশ্বে ১০% শতাংশ  মানুষের  মৃত্যু হয় পরোক্ষ ধূমপানের জন্য।  ২০১১ সালের  এক গবেষণায় বলা  হয়েছে, যেসব  শিশু  পরোক্ষ  ধূমপানের শিকার  তাদের  আচরণের পরিবর্তন  হয়। সংশোধিত আইন  ২০১৩ ও বিধিমালা  ২০১৫ তে নারী    শিশুসহ সব অধূমপায়ীকে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার  থেকে  রক্ষায় কঠোর বিধান  রাখা  হয়েছে।  এ লক্ষ্যে পাবলিক প্লেস  ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান  সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।  এ বিষয়ে   সবস্তরের জনগণকে  সচেতন  হওয়া  একান্ত  প্রয়োজন। আপনি  নিজে ধূমপান  থেকে  বিরত থাকুন  এবং  অপরকে ধূমপানে নিরুৎসাহিত করুন।  আপনি , আমি  এবং  আমরা  প্রত্যক্ষ বা ধূমপানের তীব্র প্রতিরোধসহ প্রতিকার করতে  পারি।

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
শিক্ষার্থী-রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। 
প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2023