যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় লিজ ট্রাসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কনজারভেটিভ পার্টির এই নেতা তার নেতৃত্বের মাধ্যমে ব্রিটেনকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে সে দেশের জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা বৃদ্ধি করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

আজ সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লিজের নাম ঘোষণা করা হয়। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেলেন তিনি।

শেখ হাসিনা শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও সহনশীলতার মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে ব্রিটেন ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্তোষ প্রকাশ এবং তা উত্তরোত্তর বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন।

রাজনীতি, অর্থনীতি ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য কামনা করেন।

কনজারভেটিভ পার্টির চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাব ব্রাডি জানিয়েছেন, দলীয় ভোটাভুটিতে লিজ ট্রাস পেয়েছেন ৮১ হাজার ৩২৬ ভোট। আর ঋষি সুনাক পেয়েছেন ৬০ হাজার ৩৯৯ ভোট। ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন মোট ভোটারের  ৮২ দশমিক ৬ শতাংশ।

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে মঙ্গলবার লিজ ট্রাসের দেখা করার কথা রয়েছে। এরপরই যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন ৪৭ বছরের এই রাজনীতিক।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত ৭ জুলাই পদত্যাগের ঘোষণা দিলে ক্ষমতাসীন দর কনজারভেটিভ পার্টির নতুন নেতা ও নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এ প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপ পর্যন্ত টিকে ছিলেন লিজ ট্রাস এবং ঋষি সুনাক। তবে সোমবার শেষ হাসি হাসেন লিজ ট্রাস। দলের সদস্যরা পার্টির নতুন নেতা ও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাকেই বেছে নেন।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করা লিজ ট্রাস বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। বামপন্থি পরিবারে জন্ম নেওয়া ট্রাস প্রথমে লিবারেল ডেমোক্র্যাট ছিলেন। তবে ২০১০ সালে তিনি কনজারভেটিভ পার্টি থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ট্রাস ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ছিলেন। তবে ব্রিটিশরা ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিলে তিনি দ্রুত এর কট্টর সমর্থক হয়ে ওঠেন। এরপর ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন লিজ ট্রাসকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে গঠিত প্রতিনিধি দলের প্রধান করেছিলেন। গত বছর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ট্রাস।

লিজ ট্রাস যেসব পোশাক পরেন এবং ছবি তোলার জন্য যেসব জায়গা বেছে নেন, যেমন এস্তোনিয়ায় গিয়ে ট্যাংকে এবং মস্কোয় গিয়ে পশমের টুপি পরে ছবি তোলা ইত্যাদি কারণে অনেকে তাকে প্রথম নারী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের সঙ্গে তুলনা করেন। ইউক্রেন ইস্যুতে তিনি রাশিয়ার কঠিন সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024