নিজ উদ্যোগে তালগাছের বীজ রোপন করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বৃক্ষপ্রেমী যশোরের অভয়নগরে ধোপাদী গ্রামের চিত্ররঞ্জন দাস।



তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে-উঁকি মারে আকাশে’। এই কবিতাটি মনে করিয়ে দেয় আকাশমুখী এই গাছটির কথা। যদিও আজকাল গ্রাম বাংলায় দেখা যায় না অগণতি তাল গাছের সারি। সময়ের পরিক্রমায় তালগাছের সংখ্যাও কমে গিয়ে আজ অনেকটাই বিলপ্তির পথে।


ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কাজের অংশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুকি মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ প্রকৃতির সৌন্দর্য,পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং সবুজ বাংলাদেশ গড়তে নিজ এলাকায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে এক দরিদ্র কৃষক চিত্তরঞ্জন দাস। 

চিত্তরঞ্জন দাস পেশায়  একজন দরিদ্র  কৃষক হয়েও পরিবেশ সচেতন এই  মানুষটিএ পর্যন্ত  ২০১০ সাল থেকে ২২ টি রাস্তায় পর্যায়ক্রমে রোপন করেছেন ৫৫  হাজার তালগাছ। বর্তমানে তার পরিচর্যায় প্রায় ২০ থেকে ২৫  হাজার তালগাছ রয়েছে। তিনি বলেন নিজ খরচে গ্রামের মানুষের কাছ থেকে তালের বীজ ক্রয় করে রাস্তার দুইপাশে রোপন করেছি -মসিহাটি, মনিরামপুর রোড, বুইকারা রোড, সরখোলা রোড, ধোপাদী সহ বিভিন্ন এলাকায়।  তিনি বলেন,আমি সামান্য কৃষক তাই বলে দেশের জন্য কিছু করতে পারবো না, যেহেতু তালগাছ এখন বিলুপ্তির পথে, আমি চলে গেলেও মানুষের কাছে স্মৃতি হয়ে থাকবো,মানুষের উপকার হবে তার জন্য  এ উদ্যোগ নিয়েছি। 


গাছ একটু বড় হলেই অনেকে ডাল-পাতা ছেঁটে নিয়ে যায়। তালপাখা বানানোর জন্য একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি পাতা কেটে নিয়ে যায়। আমি একদিন থাকবো না কিন্তু এই তালের চারা আমার স্মৃতি বহন করবে শত শত বছর। মুলত তাল গাছের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকেই এ গাছ লাগিয়ে তার পরিচর্যা করে আসছি।


এলাকাবাসী জানান, রোদ গরমে কৃষি কাজ করে রাস্তার দু'ধারে লাগানো তাল গাছের ছায়াই বসে বিশ্রাম করতে পারি এটা আমাদের বড় পাওয়া।পথচারীরা চিত্তরঞ্জন দাশের এই কল্যাণকর উদ্যোগকে  সাধুবাদ জানিয়েছেন। 


পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে সকল ধরনের গাছে থাকা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।সরকারি ভাবে সার্বিক সহযোগিতা পেলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে দেশের সকল জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে সবুজ শ্যামল ও সুন্দর বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই।

প্রকাশক : কাজী জসিম উদ্দিন   |   সম্পাদক : ওয়াহিদুজ্জামান

© Deshchitro 2024